“হিসাব বিজ্ঞান মানুষের মূল্যবােধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপর্ণ ভূমিকা রাখে।” এই সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন লেখ। (অনু্ধ্ব -২৫০ শব্দ)। নবম শ্রেনী হিসাববিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট এর ৬ষ্ঠ সপ্তাহের প্রশ্ন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। তাই এখন অনেক শিক্ষার্থী তাদের অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্নের উত্তর খুজছে।
৯ম শ্রেনী হিসাব বিজ্ঞান এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
সুতরাং, আজ তোমারদে ৬ষ্ট সপ্তাহের নবম শ্রেনীর হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের সমাধান দেওয়া হবে। প্রথমে নিচের ছবি থেকে প্রশ্ন ও নির্দেশনা ভালো করে দেখে নেও।
হিসাব বিজ্ঞান মানুষের মূল্যবােধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে
তারিখ :০৭ জুন, ২০২১
বরাবর,
প্রধান শিক্ষক
অ আ উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম
বিষয়ঃ মানুষের মূল্যবোধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে হিসাব বিজ্ঞানের ভূমিকা বিষয়ক প্রতিবেদন
জনাব, বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং হাআ.সাউ.বি ০৬/২০২১তারিখ :০৭ জুন ২০২ অনুসারে“ হিসাব বিজ্ঞান মানুষের মূল্যবোধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে হিসাব বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে”) শীর্ষক প্রতিবেদনটি নিন্নে পেশ করছি।
ভূমিকা
হিসাববিজ্ঞান শব্দটি“ হিসাব ‘ ও “বিজ্ঞান শব্দ দুটির সম্মিলিত রূপ। আভিধানিক অর্থে হিসাব বলতে গণনা বুঝায়। পারিভাষিক অর্থে হিসাব বলতে অর্থের দ্বারা পরিমাপযোগ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি, দায় ও আয়-ব্যয় সংক্রান্ত লেনদেনের বিবরণকে বুঝায়। অন্যদিকে বিজ্ঞান বলতে কোন বিষয়ে সুসংবদ্ধ ও সুশৃঙ্খল জ্ঞানকে বুঝায় । সুতরাং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে লিপিবদ্ধকরন, সংরক্ষণ, আর্থিক ফলাফল ও অবস্থা নির্ণয় এবং বিশ্লেষণ করার সুসংবদ্ধ জ্ঞানকে
হিসাববিজ্ঞান বলে।
হিসাববিজ্ঞানের ধারণা
হিসাববিজ্ঞান এমন একুটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আর্থিক কার্যাবলি হিসাবের বইতে সুষ্ঠুভারে লিপিবদ্ধ করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে আর্থিক কার্যাবলির ফলাফল জানা যায়। অর্থাৎ হিসাববিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে হিসাবের বিভিন্ন বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তত করা হয়,যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা জানাযায় । এ কারণেই হিসাববিজ্ঞানকে ব্যবসায়ের ভাষা বলাহয়।
A.W Johnson এর মতে,“ অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপযোগ্য ব্যবসায়িক লেনদেনসমূহের সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সুসংবদ্ধ লিপিবদ্ধকরণ আর্থিক প্রতিবেদন প্র্ততকরণ ও বিশ্লেষণ ও বিশদ ব্যাখ্যাকরণকে হিসাববিজ্ঞান বলে । এ সকল প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ ব্যবসার পরিচালকগণকে ভবিষ্যত ব্যবসা পরিচালনা বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে থাকে।
হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য
হিসাববিজ্ঞানের মুল কাজ হলব্যয়-উপযোগিতা বিশ্লেষণ, নিরীক্ষণ এবং আর্থিক বিবরণী প্রকাশ হিসাববিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য হল আর্থিক লেনদেনগুলো হিসাবের বইতে সঠিকভাবে লিপিবদ্ধকরণ তা হবে হিসাববিজ্ঞানের নীতি অনুসারে । যদি লিপিবদ্ধকরণ সঠিক না হয় তাহলে হিসাবের আর্থিক বিবরণী তার সঠিকতা হারাবে। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ফলাফল ও অবস্থা নিরপন করা হিসাববিজ্ঞানের আরো একটি উদ্দেশ্য । কারণ হিসাববিজ্ঞানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় ,লাভ-ক্ষতি দেনা পাওনা ইত্যাদির হিসাব ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় লেনদেনের হিসাব পাওয়া যায়।
হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি
মনে আধুনিক হিসাব বিজ্ঞানের উৎপত্তি ইতালিতে । ১৪৯৪ সালে ইতালিয়ান গনিতবিদ লুকা প্যাসিওলি গণিতশাস্ত্রের(সুন্মাডি এরিখিমেটিকা ,জিওমেট্রিকা, প্রপোরসোনিয়েট, প্রোপোরসনালিটা) উপর একটি বই লেখেন । এই বইয়ের পঞ্চম অধ্যায়ে তিনি হিসাববিজ্ঞানের মুল ভিত্তি দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেন|
সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাব বিজ্ঞানের সম্পর্ক
হিসাববিজ্ঞান শুধু মুনাফা নির্নয়ে ব্যবহার হয় না। মুনাফা নির্ণয়ের পাশাপাশি ব্যবসার প্রতিষ্ঠা কর্তৃক সমাজ এবং পরিবেশেরও যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়, হিসাববিজ্ঞান মেদিকটিতেও অবদান রাখে। যেমন- জলবায়ুদূষণ রোধে প্রতিষ্ঠান কিছু অর্থ খরচ করবে এবং হিসাবরক্ষক তার হিসাব রাখবে এবং সে হিসাব থেকে বুঝা যাবে ব্যবসার মালিক সমাজ এবং পরিবেশ সম্পর্কে কতটুকু সজাগ | বিশেষ করে তেল কোম্পানিগুলো বায়ুদূষণ রোধে অনেক ব্যয় করে থাকে। অথবা শিল্প – কারখানা থেকে নির্গত ধোয়া অশপাশের পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। ব্যবসায়ের মালিক ও হিসাবরক্ষককে এর প্রতিরোধে অর্থখরচ করতে হয় হিসাব রাখতে হয় এবং এ বিষয়ে সরকারের নিয়মনীতিকে অনুসরন করে চলতে হয়।
হিসাববিজ্ঞান ও মূল্যবোধ
হিসাব বিজ্ঞান সমাজ ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য উপাদান হচ্ছে মুল্যবোধ। যে সকল ধারণা; বিশ্বাস, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য মানুষের আচার আচরণকে এবং কার্ধাবলীকে পরোক্ষ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সে গুলোকে একত্রে মূল্যবোধ বলে। মূল্যবোধ হলোব্যক্তি ও সমাজের চিন্তা চেতনা বিশ্বাস ধ্যান – ধারণা প্রভৃতি সমন্বয়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা মানদন্ড যার দ্বারা মানুষ কোন বিষয়ে ভালো মন্দ বিচার করে থাকে।
মুল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাব বিজ্ঞানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ । যেমনঃ
(ক) সততা ও দায়িত্ববোধবিকাশ
(ধ) খণ পরিশোধে সচেতনতা
(গ) সমাজওযাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ সৃষ্টি
(ঘ) জালিয়াতি ও প্রতারনা প্রতিরোধ করে তখন জ্ঞান মূল্যবোধ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
হিসাববিজ্ঞান ও জবাবদিহিতা
কোনব্যক্তির উপর অপ্পিতি দ্বায়িত্ব ও বন্টিত কাজ সঠিক ভাবে সম্পর্ন করে ও তার ফলাফল আদেষ্টাকে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে জবাবদিহিতা বলে। সমাজে বসবাসকারী সকল মানুষ তার কৃতকর্মের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কারো কাছে জবাবদিহি করে ধাকে। জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেমন
১। প্রতিটি দায়িত্বের কেন্দ্রে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্য বন্টন করে দেওয়ার ফলে প্রতিষ্ঠানে অপচয়, অপব্যয়, তহবিল চুরি ও জালিয়াতি কমে যায়।
২। প্রতিটি আর্থিক কর্মকান্ডে হিসাব ব্যবস্থার প্রতিফলিত হয়। এ জন্য প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়।
ও। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের মধ্যে দায়ি খন্টন ওউক্ত দায়িত্ব পালনের জন্যে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান অর্জিতহয়।
৪1 অর্পিতি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলে শাস্িমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকলে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ দায়িত্ব পালনে সচেতন হবে।
উপসংহার
হিসাববিজ্ঞান যেমন সঠিক ভাবে আর্থিক ফলাফল তৈরি করার মাধ্যমে মানুষকে ন্যায় ও অমূল্য চারিত্রিক গঠনে ভূমিকা রাখে। তেমনি হিসাববিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে হিসাব সচেতনতা বৃদ্ধি পায় ,যা একজন মানুষকে তার অর্জিত আয় হতে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে শেখায় । পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, মানুষের মূল্যবোধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞান অনেক অবদান রাখে ।